ইলিশ মাছের নাম শুনলে জিভে জল আসে না এমন বাঙালি হাতে গোনা! সর্ষে ইলিশ, ভাপা, ইলিশ পাতুরি, দই ইলিশ, ইলিশের টক, ইলিশের ডিম ভাজা আর তেল— আর কত কী যে বাঙালি ইলিশ দিয়ে রাঁধতে পারে, তার তালিকা শেষ হওয়ার নয়। তবে বাঙালির ইলিশ প্রেম যতটা খাঁটি, ইলিশের বাঙালি প্রেমও কিন্তু ঠিক ততটাই। আমরা যেমন ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছি ইলিশকে। ইলিশও নিজের পুষ্টিগুণে আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষা করে। পাতে ইলিশ পড়লে স্বাদরক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্যরক্ষাও হয়।
১) হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষা: ইলিশ মাছে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই কম। অন্য দিকে, প্রচুর মাত্রায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই এই মাছ খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হৃদ্যন্ত্রও সুস্থ থাকে।
২) রক্ত সঞ্চালন: সামুদ্রিক মাছে থাকা ইপিএ ও ডিএইচএ ওমেগা-থ্রি-অয়েল শরীরে ইকসিনয়েড হরমোন তৈরি হওয়ায় বাধা দেয়। এই হরমোনের প্রভাবে রক্ত জমাট বেঁধে শিরা ফুলে যায়। ইলিশ মাছ খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। থ্রম্বসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।
৩) বাতের ব্যথা: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের সঙ্গে অস্টিয়োআর্থারাইটিসের সম্পর্ক রয়েছে। প্রতি দিনের ডায়েটে সামুদ্রিক মাছ থাকলে বাতের ব্যথা, গাঁট ফুলে গিয়ে যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। ইলিশে ওমেগা থ্রি-তে ভরপুর থাকে।
৪) চোখের স্বাস্থ্য: তেলযুক্ত মাছ খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভাল থাকে, চোখ উজ্জ্বল হয়। বয়সকালে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসার মোকাবিলা করতে পারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। ইলিশ মাছের মধ্যে থাকা ভিটামিন এ অন্ধত্বের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৫) ফুসফুস ভাল রাখে: সামুদ্রিক মাছ ফুসফুস ভাল রাখতে কার্যকর। শিশুদের ক্ষেত্রে হাঁপানি রোধ করতে পারে ইলিশ মাছ। যাঁরা নিয়মিত মাছ খান, তাঁদের ফুসফুস অনেক বেশি শক্তিশালী হয়।
৬) অবসাদ দূর করে: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড অবসাদের মোকাবিলা করতে পারে। সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডার, পোস্ট ন্যাটাল ডিপ্রেশন কাটাতে পারে ইলিশ মাছ।
৭) মস্তিষ্কের কার্যকারীতা বাড়ায়: মস্তিষ্কের ৬০ শতাংশই তৈরি ফ্যাট দিয়ে। যার অধিকাংশই ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। ইলিশ মাছ খেলে বয়স কালে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কমে। শিশুদের মস্তিষ্কের গঠনেও সাহায্য করে ডিএইচএ। অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার রোধ করতে পারে ইলিশ মাছ। স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, পড়াশোনায় মনযোগও বাড়ায়।
ইলিশকে মাছের রাজা বলা হয়ে থাকে। একটি নির্দিষ্ট মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরা হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট মৌসুম ছাড়াও মাঝে মাঝে ইলিশ মাছ ধরা হয়ে থাকে। যার কারণে ইলিশ মাছ আজকে বিলুপ্তির পথে। বঙ্গোপসাগরের ইলিশ মাছ জন্ম নিয়ে থাকে। ইলিশ মাছের যখন ডিম ছারার সময় হয় তখন বিভিন্ন নদীতে চলে আসে । ডিম ছারার সময় যখন ইলিশ মাছ নদীতে আসে তখন জেলেরা মা ইলিশ ধরে ফেলে এর কারনেই ইলিশ মাছ আজকে বিলুপ্তির পথে। ইলিশ মাছ বেশি ধরা হয়ে থাকে পদ্মা নদীতে থেকে। খেতে অনেক সুস্বাদু হওয়ায় অনেকেই এই ইলিশ মাছ পছন্দ করে থাকে। এ কারণে সকলে চায় তাদের বাজারের তালিকায় ইলিশ মাছ রাখার জন্য।